নামী অভিনেত্রী, আবার অভিনয় ছাড়া বাকি সময়টা তারকা সুলভ নয়, ছিমছাম জীবনযাপনই পছন্দ স্বস্তিকার। কাজের ফাঁকে সময় পেলেই ইতি উতি ঘুরে বেড়াতে ভালোবাসেন। এই যেমনটা টুক করে চলে গিয়েছিলেন ইছাপুরে। সেখানেই সূর্যাস্তের সময় গঙ্গাপাড়ে গিয়ে মন ভরে গেল স্বস্তিকার। নিজের ফেসবুকের পাতায় লেই অনুভূতিই তুলে ধরেছেন অভিনেত্রী।
সূর্যাস্তের সময় গঙ্গাপাড়ের মনোরম কিছু মুহূর্তের ছবি পোস্ট করেছেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। যেখানে তাঁর সঙ্গে বোন অজপা ও ভাই শুভকে দেখা যাচ্ছে। লম্বা পোস্টে স্বস্তিকা লিখেছেন, 'কাঁচড়াপাড়ায় একটা ইভেন্ট ছিল, সেটা সেরে ভাই-এর বাড়ি গেলাম। ইছাপুর-এ। সুন্দর নিরিবিলি একটা ছোট শহর, ভারি ভালো লাগল।শুভ - আমার ভাই। আমার আপনজন। দুপুরবেলা এত খাওয়ালো যে পরের দুদিন আর কিছু খাওয়া গেল না।
আমরা সবাই গেছিলাম, আমি, বোন, আমার টিমের সবাই, বাবাই আমার মেক আপ আর্টিস্ট, রীতা আমার কেশবিন্যাস করে যে, রূপক আর রঞ্জনও গেছিলো, আমার গাড়ির চালক আর পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট, কিন্তু ওরা ভাত ঘুম দিচ্ছিল বলে গঙ্গার ঘাটে পৌঁছতে পারল না।'
অভিনেত্রী আরও লেখেন, ‘বিকেলে ভাই এর পুরনো স্কুটারে চড়ে ঘুরে বেড়ালাম, মানে আমি আর শুভ স্কুটারে, বাকি জনতা গাড়িতে, পুরনো স্কুটার, চালানো কম হয, সে থেকে থেকেই স্টার্ট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, আর ভাই টেনশন করে বলছে, দিদি এত ভিড় বাজারে, কি হবে?! কি আর হবে ? আমি কি সেই ? না আমি সেই নই, মানুষ ঠাহর করতে করতে ভোঁ করে বেরিয়ে যাব। যা বলছিলাম, আমরা গঙ্গার পাড়ে সূর্যাস্ত দেখলাম, কী যে সুন্দর হয়েছিল আকাশটা কী বলব।’
গঙ্গার ওপারেই চন্দরনগর, সেই প্রসঙ্গ টেলে স্বস্তিকা মজা করে লেখেন, ‘আমাদের এক পরিচিত ডাক্তারবাবু চন্দননগরে থাকেন, ওনাকে ফোন করে বললাম, বারান্দায় এসে একটু উঁকি মেরে দেখুন তো অন্য কূলে আমায় দেখতে পাচ্ছেন কিনা?’
ইছাপুরে বেড়াতে বের হয়ে ঠিক কী কী দেখেছেন, সেকথাও সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিতে ভোলেননি স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। লেখেন,' রাজবাড়ি দেখলাম। ব্রিটিশ আমলে এই রাজবাড়ি থেকে উল্টো দিকে চন্দননগর অব্দি যাওয়ার একটা সুরঙ্গ ছিল, গঙ্গার নীচ দিয়ে, এখন বন্ধ। কত ইতিহাস এই ছোট্ট জায়গাটার। কুলফি খেলাম, ফিরতি পথে কণ্ঠাধর কালী বাড়িতে মায়ের দর্শন করে মনটায় কী তৃপ্তিটাই না হলো।'
অভিনেত্রী যাঁকে ভাই বলেন, শুভ নামে সেই ব্যক্তি যৌথ পরিবারে বাস করেন। সে প্রসঙ্গ টেনে অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘ভাই এর ভরা পরিবার, আজকালকার দিনে বিরল। স্ত্রী, সন্তান, ছোট ভাই, ছোট বউ, তাদের পুচকু মেয়ে, মা, বাবা, পিসি। এখন দুটো মানুষই একসঙ্গে থাকতে পারে না আর ওরা সবাই সবাইকে আগলে বেশ আছে। ঠাকুর ওদের ভাল রাখুক।’
এদিকে এদিন বোন অজপার সাজগোজ বারবার অভিনেত্রীকে তাঁর মা-মাসিদের কথা মনে করিয়েছে। অভিনেত্রী তাই লিখেছেন, বোন সেদিন মায়ের মতন একটা বড় মেরুন টিপ পড়েছিল, হঠাৎ করে তাকালে একবার মনে হচ্ছে মা, একবার মনে হচ্ছে বড় মাসি। সবাই চলে যায়, আমরা তাদের অবয়ব আঁকড়ে পরে থাকি। বোন বলল, জানিস তো দিদি, আরেকটু বয়স হলে দেখবি আমরা পুরো মা মাসিদের মতন দেখতে হয়ে যাব। তারপর ওর সেই হাড় জ্বালানি কথাটাও বলল, দিদি আমায় কিন্তু বেশি মায়ের মতন লাগবে, তোকে কম।'
এরপরই বোনের এই কথার ব্য়াখ্যা করে স্বস্তিকা লিখেছেন, ‘আমায় রাগানোর জন্য বলে কিন্তু কথাটা সত্যি। আমার বোন পুরো মা - জেরক্স মেশিন থেকে যেন বেরিয়েছে। না মেনে উপায় নেই। যাক, ওর দিকে তাকালেই যদি মা কে দেখতে পাই, এই তো অনেক। এমন সুযোগ আর কজন পায় বলুন দেখি?!’
সবশেষে লিখেছেন, ‘প্রচুর হাসলাম সেদিন, বোকা বোকা কথার অন্ত নেই আমাদের। রীতা এত জোরে হাসে, ওর হাসি শুনলে এমনি হাসি পেয়ে যায়। বামুন বাড়ির মেয়ে আমরা, হাতে ছাঁদা বেঁধে তো আনতেই হবে বাপু, আমাদের সঙ্গে কে বাড়ি ফিরল বলুন তো? দাদা বৌদির বিরিয়ানি’।